চিত্রশিল্পীরা এমনি নানারকম যুক্তি দিয়ে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে তুলে ধরলেন যে চারুকলা শিক্ষা দেশের প্রয়োজনেই প্রতিষ্ঠা করা উচিত। শিল্পীদের এই উদ্যোগকে প্রশংসা করে এগিয়ে আসেন কয়েকজন বিদ্যোৎসাহী বাঙালি। বিজ্ঞানী ড. কুদরত-এ-খুদা তখন পূর্ব-পাকিস্তান সরকারের জনশিক্ষা বিভাগের প্রধান (ডি পি আই)। তিনিও সরকারকে বোঝালেন চারুকলা শিক্ষা অবশ্যই প্রয়োজন। সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সলিমুল্লাহ ফাহমি, আবুল কাশেম প্রমুখ শিল্পীদের পাশে এসে দাঁড়ালেন। তাঁরা নানাভাবে সরকারের চারুকলা শিক্ষার প্রতি অনীহা ও বিরূপ মনোভাবকে সরিয়ে বিষয়টির প্রয়োজনকে উপলদ্ধি করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। সেই সময়ে লেখক, সাংবাদিক ও সংস্কৃতির মানুষরাও ছবি আঁকা শিক্ষার গুরুত্ব বিষয়ে খবরের কাগজে লেখালেখি শুরু করলেন। তাঁরা হলেন ড. সারোয়ার মোরশেদ, বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, মুনীর চৌধুরী, শওকত ওসমান, অজিত গুহ, সিকানদার আবু জাফর, ওয়াহিদুল হক প্রমুখ। লেখালেখি ও আলোচনার ফলে সরকারও ধীরে ধীরে নমনীয় হলেন। চারুকলা প্রতিষ্ঠান শুরু হবার ৪/৫ বছরের মধ্যেই চিত্রশিল্পীরা প্রমাণ করে চললেন যে কাজ মানুষকে আনন্দ দেয় ও মানুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হয় সে কাজ কখনো খারাপ কিছু হতে পারে না। চিত্রকলা শিক্ষা ও চর্চা দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণের অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কাজ: ছবি আঁকা কল্যাণকর কেন? |